শনিবার, ৯ জুলাই, ২০১১

আবারও হিন্দু মেয়ে ধর্ষন


প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার চৈতাজান এলাকায় এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মেয়েটি ও তার স্বজনদের অভিযোগ, হুমকি দিয়ে নেশাদ্রব্য খাওয়ানোর পর তাকে ধর্ষণ করে স্থানীয় বখাটে মো. শাহজামাল (১৯)। 
পরে তার মাথা ন্যাড়া করে বাড়িতে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় ধর্ষক। ঘটনার প্রায় পাঁচ দিন পর মেয়েটির জ্ঞান ফেরে।
শাহজামাল এবার কুমরী তেঘরিয়া মাদ্রাসা থেকে আলিম পরীক্ষা দিয়েছে। চৈতাজান এলাকায় তার একটি মুদি দোকান রয়েছে। ঘটনার পর সে পালিয়ে গেলেও পুলিশ তার মা শরুফা বেগম ও দুই মামা আয়নাল হক এবং সৈয়দ আলীকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, ধর্ষণের শিকার মেয়েটি শ্রীবরদীর ঘুনাপাড়া গ্রামের এক কৃষকের সন্তান। কুমরী কাটাজান বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে সে লেখাপড়া করছে। সম্প্রতি মেয়েটি স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে চৈতাজান এলাকার শাহজামাল তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু তাতে সাড়া না পেয়ে গত ২০ জুন সকালে সে অস্ত্রের মুখে স্কুলে যাওয়ার পথে ওই ছাত্রীকে অপহরণ করে তার দোকানে নিয়ে যায়। হিন্দু পরিবারের সদস্য মেয়েটিকে সে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে একটি কেক খেতে বাধ্য করে। এর পরপরই চেতনা হারায় মেয়েটি। শাহজামাল এরপর তাকে ধর্ষণ করে মাথা ন্যাড়া করে দেয়। তিন দিন পর অচেতন অবস্থাতেই মেয়েটিকে তার বাবার বাড়ির আঙিনায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায় শাহজামাল। সে সময় স্কুলছাত্রীর পরনে নিজের পোশাকের পরিবর্তে ছিল ছেলেদের টি-শার্ট ও প্যান্ট।
এদিকে নিখোঁজ মেয়ের জন্য মা-বাবা বিভিন্ন জায়গায় সন্ধান চালিয়ে একপর্যায়ে হতাশ হয়ে পড়েন। তিন দিন পর তাকে বাড়ির আঙিনায় অচেতন অবস্থায় পাওয়ার পর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এর দুদিন পর গত শনিবার জ্ঞান ফেরার পর অপহৃত হওয়ার কথা জানায় মেয়েটি। ধর্ষণের ঘটনা সম্পর্কেও তখন নিশ্চিত হওয়া যায়।
নির্যাতিত স্কুলছাত্রীর বাবা গত রবিবার শ্রীবরদী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন। মামলায় শাহজামাল, তার ভাই সুরুজ্জামান, বাবা মতিউর রহমান, মা শরুফা বেগম এবং দুই মামাসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়। পুলিশ এরপর রাতেই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠায়। অন্যদিকে শেরপুর সিভিল সার্জন অফিসে সোমবার মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়।
শাহজামাল এবং তার পরিবারের লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেলেও তারা সংখ্যালঘু স্কুলছাত্রীর পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার আকস্মিকতায় জ্ঞান ফেরার পর থেকে অস্বাভাবিক আচরণ করছে ছাত্রীটি। নিরাপত্তার স্বার্থে সে এখন শেরপুর শহরে মামার বাড়িতে রয়েছে।
মেয়েটির কাছে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে কালের কণ্ঠকে সে বলে, 'গত ২০ জুন সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে শাহজামাল আমাকে অস্ত্রের মুখে তার দোকানে ধরে নিয়ে যায়। সেখানে হাতের ছুরি দেখিয়ে সে আমাকে একটা কেক খেতে বাধ্য করে। কেক খাওয়ার পর আমি আর কিছু বলতে পারি না। পরের শনিবার জ্ঞান ফিরে আমি নিজেকে আমাদের বাড়িতে দেখি। আমার কাঁধ পর্যন্ত চুল ছিল, সেটা কেটে মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হয়েছে। পরনের সাদা থ্রিপিসের পরিবর্তে ছেলেদের পোশাক পরিয়ে বাড়িতে ফেলে রেখে যায় শাহজামাল। সে আমার জীবনের সবকিছু শেষ করে দিয়েছে।'
চৈতাজানি, ঘুনাপাড়া ও কুমরী কাটাজান এলাকার লোকজনের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার কথা বলে জানা যায়, এর আগে কান্দাপাড়া এলাকার এক মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার দায়ে গ্রাম্য সালিসে শাহজামালকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। সে বখাটে এবং স্কুলগামী ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করত। কুমরী কাটাজান বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ এস এম মোখতারুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, '২০ জুনের ঘটনাটি লোমহর্ষক। আমরা দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। মেয়েটিকে নির্যাতনের ঘটনার পর অন্য অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন।'
শ্রীবরদী থানার ওসি মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, 'আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মামলাটির তদন্ত করছি। বখাটের মা ও দুই মামাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার মূল হোতাকে শিগগিরই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।' শেরপুর জেলা হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. চন্দন চক্রবর্ত্তী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ভিকটিমের পাকস্থলি থেকে নেশাদ্রব্যের নমুনা সংগ্রহ করে মহাখালীর রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া হাসপাতালে ভর্তি করতে দেরি হওয়ায় ধর্ষণের ঘটনাটি নিশ্চিত হতে বেশ কয়েকটি প্যাথলজি পরীক্ষা করা হয়েছে।'
শেরপুর জেলা মহিলা পরিষদ ও জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্যপরিষদ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে।

1 টি মন্তব্য:

  1. বাংলাদেশে যতোবার হিন্দুরা নির্যাতিত হোয়েছে ততোবার নারী ধর্ষণ হোতে দেখাগেছে |বাংলাদেশ খূন,ছিনতাই, ডাকাতি এর কারোনে না | নারী ধর্ষণ এর কারোনে বিখ্যাত |

    উত্তরমুছুন